Saturday, June 2, 2018

গুচ্ছ কবিতা- সুনন্দ মন্ডল




ব্যতীত ব্যতিক্রম



নিস্তব্ধ দুপুর
ঝড়ের গান
ভাঙল পাতার ঘুম।

রোদ হারানো
শোক বাড়ানো
নদীর চড়ে আগুন।

ওই যে সেথা
কাদের বাসা
পুড়ছে খড়ের গাদা।

নিয়ম করে
মাখছে মুখে
জ্বালাতনের নেশা।

বিরহ কেবল
বাড়ছে রোজ
নিত্যদিনের আনাজ।

মাঝির পালে
নোঙর আঁটা
ওপারেতে উড়ছে খই।


রৌরব
  

ভূমি কাঁপল, তীব্র গোঙানি, রক্তের দাগ
        ঘন ঘন শ্বাস, শিকল ছিঁড়ে
        ‎             প্রহসনের উন্নয়ন।
বিক্ষিপ্ত জনগণ--- কুলেখাড়া গাছ,
                                  বিশ্বহরি পাতার প্রলেপ।
                       ‎অকাল বর্ষণ
       রৌদ্রাস্য হরিত বিকেল ছুঁই ছুঁই।
পারস্পরিক হ্যাঁচকা, দখলদারি
     নেতৃত্বের ব্যালট উরো-খই।
পাগলা দাশু ভর করেছে,
       নির্মাণের খেলা নাকি সংকটের পিরামিড!
রিক্ত জীর্ণ দেহ, বিতৃষ্ণার গ্লানি
                পুঁজ জমা ক্ষত চৌ-দেয়ালে।
           মানুষ ভিক্ষুক জানতাম,
            ‎                     নয় ভক্ষক!
তবু রক্ষার নামে বলি চড়ে রোজ রাস্তায়।
            

বিরুদ্ধ রথ

শত্রু নয় সে, বলুক যতই বিরুদ্ধে
ভাঙুক পাহাড় হুমকিতে! সমতলে
বাণী করে গিলে খাও, ও মেশাও চর্বিতে
কবিতার আলো, অক্ষত শির অঞ্চলে।
কুঠার আঘাতে হানব বিভেদ মন্দিরে,
তোমার শরীর জানি, প্রিয় কত পবিত্র।
কে আসে আসুক! লাগাতে ক্ষত এ মঞ্জিরে
রক্তের বিনিময়ে কবিতায় ভরব হাজার পাত্র।
তোমরা যতই বলি দেবে মন, জগতের
আমরা কেবল সুধার শিখর গড়ে যাব।
ভুল মেনে নিয়ে, ভুল ভেঙে দেব তোমাদের!
প্রস্তুত, এসো আমাদের রথে ফিতে মাপ।
           


পঞ্চশর
                
খসখসে পাতার শিরা,
           রসালো ফলের স্বাদ নেই গায়ে।
           ‎
           ‎জ্বলুনি ডেটল জলে ধুয়ে দিই
           ‎                      বিষণ্ন দুপুরের কাব্যগাথা। 
        সারাক্ষণ নিঃশব্দে আনাগোনা কথারা
        ‎         ভিড় করে জানালার কাঁচে।
        ‎সাক্ষী পুরুষ মধ্যাহ্ন! বোঝা মাথায় যত।
বিকেলের রাগিনীতে সুর তোলে কিছু না পাওয়া!
পাপ-পুণ্যের হিসেবে হঠাৎই সন্ধ্যার গাঢ় নীল।
বিষক্রিয়া শরীর জুড়ে, পঞ্চশরের খোঁচায় বিদ্ধ প্রাণ।

  


বালিকা


তখনও রাত বালিকা,
        একপায়ে হেঁটে আসে আঁধার।
        ‎          পুরুষ মেখেছে গায়ে কাম!
        ‎বিছানার কোণে শ্রীময়ীর টান।
বিরহী সূর্য ক্লান্ত হয়ে
          ঘুমায় রাতের কালো খাটে।
          ‎      তখন যেমন প্রান্ত বুরুশ জাগে
          ‎প্রতি নিউরোনে ডালে ডালে।
ধমনীর চাপ, শিরার হাতছানি
       টুঁটি চিপে ধরে অপরিচিত বালিকার
       ‎হাতের তালুতে বন্দি ভবিষ্যৎ
       বাইরের আকাশ ফুঁড়ে উড়ে যেতে চায় পাখিটা।

No comments:

Post a Comment