Saturday, June 2, 2018

কবিতাগুচ্ছ সৌমেন চট্টোপাধ্যায়






পথনাটিকা

মুঠো খই গঙ্গামাটি 
তিক্ষ্ণ মুখ বাঁশ
    ঢালু পুকুরপাড়
পাড়ানির কড়ি
মুহুর্মুহু কান্না
একা একা পুড়ে যায় পিরু বাগদি

অতএব দৃশ্যান্তরে উড়ে যাক খুচরো সব ভয়
রাস্তাময় ছড়িয়ে রাখা পয়সা খুঁটে নেয় কেউ
পথনাটিকা শেষে যে যার বাড়ি ফিরে আয়না দেখে
ঘামতেলে যাবতীয় রঙ এর দেনা শোধ হলে
পিরু বাগদির বউ দরজা ও বুকের কাপড় খুলে শোয়।

প্রদর্শনী
ক্ষিধে ভয়
নাভি ঘাম
হা মুখ
শংসাপত্রের ঋণ
সাজিয়ে রেখে চিত্রকর প্রদর্শনী করেন

ফ্রেম ছবি তেলরঙ একাকী জীবন
সরু সরু ভীতু আঙুল
ছবিঘরে একাই তালা খোলেন তালা বন্ধ করেন
ফ্রেম থেকে ছবি নামাতে ভুলে গেলে নিজেকেই ধমক দেন
আত্মপ্রতিকৃতি আঁকতে শেখেননি এখনও
তাই নিজেকেই ঝুলিয়ে দেন ফ্রেম থেকে ফ্রেমে।

ভাস্কর্য
চৌখুপি দরজা ও শতদলে হাতি মুখ রূপ
রঙ রঙ কাঠের শরীর সলজ্জ বেহায়া সুখ
হাতুড়ি দরজার গায়ে ছেনি কাটা যৌথ দাগ
পেরেকের মুখে দুই ঠোঁট কুঁদে নিও কিছু বনজ কাঠ
ক্রমশ প্রহর গুনে রাখে মাঠ শূন্য তারাদের চর
ছেনি কাটা কাঠের খাঁজে ফুটে ওঠেন স্বয়ং ঈশ্বর ।

শিকার উৎসব
নাও ঘিরে ফেলো কবন্ধ মুখ
বন্ধ দরজার থেকে সরে এসো
দেওয়ালে দেওয়াল, পিঠ ঠেকে যাবে
তোমাকে ঘিরে ফেলেছে ভয়
তুমিও মেতে ওঠো তুমুল গন্ধে


এইবার বর্শা এনেছি লৌহ শলাকা মুখে
তোমাকেও রেখেছি বদ্ধভূমিতে
পালাতে গেলেই ছিঁড়ে নেব কলিজা ও নলি

আহা মিথ্যেই বাধা দিচ্ছ
উৎসবের নাম রাখা হয়েছে শিকার উৎসব
ক্যাম্প ফায়ারে এসে বসো
আগুনে কাঠ ঠেলে দিতে দিতে
প্লিজ বাধা দিও না
লৌহ শলাকা তো আগেও দেখেছ অনেকবার
আর তুমিও জানো এইবারে বিদ্ধ হওয়ার পালা কার ছিল!

No comments:

Post a Comment