Saturday, June 2, 2018

গুচ্ছ কবিতা শর্মিষ্ঠা





একমুখী স্রোত

স্রোতা খর নদী যেমন এক বুক
বোল্ডার গুঁড়িয়ে একা
চূর্ণ নুড়ি জলে
ভিজিয়েছে পা, সময়, প্রতীক্ষা  
তেমনি কি রোজ
অসহ্য ভালোবেসে ফিরে যাচ্ছো আয়নায়?

অসহ্য রোজ কি তেমনি প্রতীক্ষা!
সময় পা ভিজিয়েছে জলে
নুড়ি চূর্ণ একা গুঁড়িয়ে বোল্ডার বুক
এক যেমন নদী খরস্রোতা!


পিছুটান

উদ্যত তর্জনী
এবার তুমি ওকে ছেড়ে দাও
বলেছে তো!
ও এখন ছোঁবে না অদৃশ্য চুম্বক
ডেটা প্যাক ভরাবে না আর।

এক দুপুর শীতে আজ
মাদুর বিছিয়ে বসবে ছাদে
দুচোখ ভরে দেখবে এখন
গাঁদার পাপড়ি মানচিত্র।

ঝরে আসা ফুলের থেকে ঘ্রাণ
বৃন্তের নাকচাবি আর গুচ্ছ গুচ্ছ
পাপড়ি চেয়ে নেবে হাত পেতে 

তারপর সেই হাত ওর 
ভুলে যাবে
প্যাটার্ন পাসওয়ার্ড সব পিছুটান।



ছিন্নমস্তা

উপত্যকার বেগুনী ফুলে ফুলে ঢাকা 
স্তম্ভিত শরীরে এখনো তার
জেগে আছে ভয়, বিস্ময়!

বেগুনী পাপড়ি ছিঁড়ে অকথ্য তছনছ
আর তারপর
থেঁতলে দেওয়া হয়ে গেলে পর জাফরানের আলতো কেশর

ক্রুদ্ধ, উলঙ্গ, সাশ্রুনয়না –
ছিন্নভিন্ন কন্ঠ গ্রীবা মুন্ড আর রক্তের ফিনকি তার
ভিজিয়ে দিচ্ছে আশিরনখযোনি দেশমৃত্তিকা
তবু
তৃষ্ণা মিটছে না

ছোট দুটি বালিকা হাতে তার
লজ্জায়,কান্নায় মাথা গুঁজে আছে
ভারতভাগ্যবিধাতা

পতাকার উত্তরে ঘন হয়ে বসছে -
স্যাফ্রনের অসম্ভব ভারী চাঁই


ঈভের চিঠি                                                


আরো একটু কাছে এসে দেখো –
এখানে যন্ত্রণা ভালোবাসায় এসে মেশে!

এইখানে এই রেখায় রেখায়
ভালোবাসার ছেনি চলেছে।
এই দেখো আমার মোম মসৃণ তলপেট জুড়ে
আঁকা হয়ে আছে জেদ।

আলতামিরার এই বাইসনগুলো
ঠিকঠাক পড়তে পারলে
এতদিনে একবার তেমনি করে হাঁটু মুড়ে বসতে তুমি আমার সামনে।
মহিমাময় পেলভিক মাসলের সামনে।
সূর্য, পাহাড়, নদী, মাটি, বৃক্ষ, বজ্র
যেমনটি তুমি তাদের সামনে করেছ প্রায় রোজই।

আর
একবার হাঁটু মুড়ে বসতে শিখলে
তারপর সমানে সমানে কথা হতো আমাদের।                         





1 comment: