Saturday, June 2, 2018

দুটি কবিতা ঈশানী বসাক




কাগজ

বহুবছর আগে দেখেছিলাম তোমাকে। আজ আবার যখন দেখা হলো তখন মনে হচ্ছিল পুরনো ভারতবর্ষ পত্রিকা। পুরনো বইয়ের গন্ধও ভেসে আসছিলো। ভেঙ্গে যাওয়া তানপুরার সাথে সম্পর্ক চুকিয়ে এসেছো জানি। গান ছেড়ে দিলে বুঝি? কেন ? বিষ ভেবে নীল রঙ গিলে নিচ্ছি প্রতিদিন আকাশ থেকে। সেখানে না হয় দু লাইন সুখ দুঃখের এঁটোকাঁটা কোড়ালাম। এক থালায় খেলে ভালবাসা বাড়ার কথা বলে। আর তুমি সেসব তোয়াক্কা না করে গান ছেড়ে চলে এলে!
সন্ধ্যা নামার শব্দ শুনতে পাও না বলেই হয়তো। আমি তো তোমাকে জোর করতে পারিনা। শুধু যখনই দেখি পা গড়িয়ে রক্ত পড়ছে পাগলের মতো কথা বলতে চাইতাম। তুমি ভয় পেতে। রাস্তা ছেড়ে ঘাসের মধ্যে দিয়ে পালাতে। যদি লোকসমক্ষে ওসব নগরের বয়ঃসন্ধি ধরা পড়ে। একটা একটা করে সাফ হয়ে যাওয়া গাছগুলো পাচার করে দিতে দিতে তাকাতে। কখন যে আমিও ওই বোবা গাছ হয়ে গেছিলাম । তুমি একটা ক্রিসমাস ট্রির মতো আমাকে একটু মুখে জল দেওয়ার নিয়মকানুন দেখাশোনা করে নিতে। বিশ্বাস করো ওসবে রাগ করিনি। ঘরের কোণে হলুদ পাতা মেলে তাকিয়ে থাকতাম। আমার আঙুলগুলো থেকে আঁকড়ে ধরা হারিয়ে গেছে বলে এখন আর কাগজ ব্যবহার করিনা। রক্ত থামাতে পারতাম না আর তুমি বলতে দেখিস চারার জন্ম এলেই গানগুলো হারাবে। তুমি গান ছেড়ে দিতেই বুঝলাম চারাটা জন্মেই মরে গেছে।


নিয়তি

ঠিক সেইভাবে ঝড় চাই
যখন উড়ে এসে পড়বে নিয়তি
এমন বৃষ্টি নামুক
যাতে যতটুকু জল দিয়েছিলাম
তোমার হাতে, মিশে একাকার।
তুমি খুঁজবে পাগলের মতো
ওই সুদূর প্রসারী আলো:
জানো আমাদের আলোগুলো
লুকিয়ে রাখছি অন্ধকারে !
তুমি এই ভেজা গন্ধ নিয়ে
হাত ধুতে যাচ্ছ বেসিনে
আমাকে এভাবে আবছা করে দিচ্ছো
ঠিক যেমন কুয়াশা মুছে দেয়
শুধু একবার , শুধু একবার
অতীত দেখেছি বলে!
জানি তুমি কিছুই ভোলোনি
সম্ভব নয় ওভাবে।



No comments:

Post a Comment