সিলিং ফ্যান
মনে হয় যেন নিরালম্ব ,ঘরের ভিতরে চিল ।যাবজ্জীবন
শুধু দৃষ্টিজ্বালা ।ঘুরে ঘুরে খোঁজে পথ । এ সংসার উষ্ণতা বিহ্বল ,তাকে কেবল উপজাতে
চেনে ।
তার এই নিরন্তর সন্ধানের পথে অধুনা সে কিছুটা নড়বড়ে
হয়েছে ,তাই অসুয়াপ্রবণ । এমনকি আমাকেও একযোগে মু্নিষ ও মিস্ত্রি ,প্রেমিক ও গৃহস্থ
রূপে মঞ্চ-সফল বলে মনে করে আর রট রট করে কথা কয় ।
কোনদিন একা পেলে নির্মম শাসানির সুরে বলে ওঠেঃ
সবকটি খরস্রোতা নদী সমুদ্র থেকে উঠে আসতে চাইছে ক্ষুব্ধ বিছানায় ।জেগে উঠতে চাইছে
বন-জ্যোত্স্নার ভিতর ফেলে আসা সাপের খোলস …
বয়সকালে এমন প্রলাপ শুনলে কার না মাজেলে শিক-তাতা
দিতে ইচ্ছে হয় ।আমি তবু তার নাটবল্টু টাইট করে কিছুটা নারকেল তেল দিই ।
রাত্রে ভোল্টেজ বাড়লে সে মাতালের মত উদার হয়ে যায়
।আমিও বর বউ বাচ্চার তিনফোটো-মার্কা একটা বিড়ি ধরাই ।দুজনেই দুজনার মাদকতাময় হাওয়া
খেতে খেতে জানালা দিয়ে দেখি মহালক্ষী বাগানের প্রেত প্রকাণ্ড শপিং মলটার চারপাশে
ঘুরে ঘুরে কাকে যেন খুঁজছে ।
রহনি
জ্যৈষ্ঠের বার দিনে বারনি তেরো দিনে রহনি
এই খর দিনে তাতা মাটিতে প্রথম বীজ ফেলল চাষি
।ধানলক্ষীর এই হল রহনি বতর ।
মৌ্নব্রতী হয়ে ঘরে ফিরে এল । সঙ্গে নিয়ে এল
বীজপূন্যার পবিত্র মাটি ।
কিন্তু ব্যাপারটা ওখানেই চুপচাপ মিটে গেল না সেদিন
।কালিঝুলি মেখে উলুরি ঝুলুরি কত জন বেবাক নাচতে লাগল গাইতে লাগল । গাঁয়ের ছোট
ছেলেমেয়েরা আবার হাতে হাতে তাল পাতার বাঁশি গড়ে উর্ধশ্বাসে বাজাতে শুরু করে দিল ।
আকাশের দূর দূরান্তে ঘুমিয়ে থাকা মেঘগুলো হঠাত্ই
জেগে উঠল সেই বেসুরো বাঁশির শব্দে ।ভাবল , আমরা সবাই এখানে তবু রুক্ষ পৃথিবীতে এত
ব্যাঙ ডাকছে কেন ? ভাইসব চলো গিয়ে দেখে আসি আগেভাগে কোন ভায়াদ গিয়ে পাত পেড়ে বসে
পড়ল ।
No comments:
Post a Comment