বর্ষামঙ্গল
১.
তখন জন্মের গা বেয়ে
নেমে আসছে প্রলাপজ্যামিতি
ঈশ্বরের দু'চোখ ভাঙা
সমূহ বিষাদ
প্রতিটি কার্নিভালের
আগে যেভাবে আকাশ মোড়া থাকে রোশনায়
তোমাকে পেয়েছিলাম
মজে ওঠা নিভৃতে তেমনি কোনো দিন গোনায়…
তখন শহরের কাছে জমা
হচ্ছে ছেঁড়া সন্তাপ
যাদের বুক আজ ভারি
করেছে আমার স্নানধোয়া মায়াপ্রপাত…
২.
তখন তুমি ভিজেছ যে
আশ্চর্য সর্বস্বতায় তার ভিতরেই ছিল একটা লুকনো অসুখ
ঝরাপাতার রক্ত মাখছে
যে বিকেল তুমি তার হাত ধরে কতদূর চলে যাবে?
সমস্ত রাস্তার শেষে
যখন লুসিফার অন্ধকার দিয়ে বানানো একটা উপহার নিয়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে
তখন এত আগুন কোথায়
রাখবে তুমি!
জন্মান্ধ এক অনুশোচনার
কাছে বৃথা অশ্রুহীন থেকো না আর
দু'দন্ড হালকা হও। মোচন
করো এ পৃথিবীর স্মৃতিভষ্ম মাখা আজন্ম গূঢ় শোকপ্রস্তাব…
৩.
ভালবাসা ভিজে গেলে
পুরনো ছাদের কথা মনে পড়ে
যেখানে বন্দরের মতো
কোনো অজানার গর্ভ চিরে বেরিয়ে আসে এক পুড়ে যাওয়া
তার অন্তঃস্থল গলে
গেলে সারা পৃথিবীর গা বেয়ে অজস্র সেলাইচিহ্ন বৃষ্টির দাগের মতো দাহ হয়
প্রশ্বাসের কাছে মহাকালের
উষ্ণ নিশ্বাস ভেঙে পড়ে
যেন আমার ঘাড়ের কাছে
ঝুলে আছে মেঘ
এইমাত্র সমস্ত ব্যাকুলতা
টুপটাপ ঝরে যাবে শীতল ও বায়বীয়…
৪.
জানলার বাইরেই যেন
কুন্ডুলী পাকিয়ে যাচ্ছে সমস্ত সম্পর্ককথা
বিষাদ লেপ্টে স্মৃতির
গায়ে আগুন ছড়াল শুধু
ঘোর ভাঙছে মৃদু স্পর্শ। পেলব
কোনো দিনের আদল
যখন শান্তিনিকেতনের
ধুলোয় পলাশ রঙের হাহাকার গড়িয়ে
অশোকবনের সামান্য
কাছে বৃষ্টি নেমেছিল খুব
দগ্ধ বুকের দ্রাঘিমারেখায়
নিশ্চুপ নামিয়ে এসেছি দু'এক ফোটা অশ্রুসুখ!
৫.
এমন বিকারগ্রস্ত বর্ষণ
ভেঙে নিরুত্তর জারজ সন্তাপ ভারি স্নানাভিমুখী
তখন ফ্রিজ ভর্তি বাসি
মৌননীল সন্দর্ভ হিংসামন্ত্র
একটা বন ভাঙছে অনুশোচনায়। অশ্রুধারে
ফালা ফালা
আগুনের রেণু জমে পাতার
শিরায়। জালিকারেখায়
বারুদচিহ্ন লুকিয়ে
কাছেই। হয়তো
বা আঙুলের
নরম স্থিতিস্থাপকতায়…
No comments:
Post a Comment